যুক্তরাজ্যে প্রায় ২৪ লাখ ধূমপায়ী ভেপিংয়ের সহায়তা নিয়ে ধূমপানে আসক্তি কাটিয়েছেন। এ সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। ধূমপান ত্যাগ করা ব্যক্তিরা বলছেন, ভেপিং তাদের আসক্তি কাটাতে সবচেয়ে সহায়ক ভূমিকা রেখেছে।
সম্প্রতি এক গবেষণায় ধূমপান ছাড়তে ভেপিংয়ের ক্রমবর্ধমান ইতিবাচক ভূমিকার এই চিত্র উঠে এসেছে। যুক্তরাজ্যে ধূমপানবিরোধী আন্দোলনকারীদের সংগঠন অ্যাকশন অন স্মোক অ্যান্ড হেলথের হিসাবে, দেশটিতে বর্তমানে ভেপিং করে ৩৬ লাখ মানুষ, যা মোট জনসংখ্যার সাত শতাংশের বেশি। এই ভেপারদের মধ্যে দু-তৃতীয়াংশ (প্রায় ২৪ লাখ) ধূমপানে আসক্তি কাটাতে ভেপিংয়ের সহায়তা নিয়েছেন এবং সফল হয়েছেন।
অ্যাকশন অন স্মোক অ্যান্ড হেলথের জরিপে দেখা গেছে, ভেপারদের অধিকাংশ বলছেন, ভেপিং তাদের প্রচলিত সিগারেট বা তামাকজাত পণ্য ব্যবহার বর্জনে সহায়তা করেছে। যুক্তরাজ্যের বাৎসরিক জনসংখ্যা জরিপেও দেখা গেছে দেশটিতে ধূমপায়ীর সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে গত কয়েক বছরে। জরিপের হিসাবে, ২০১১ সালে ইংল্যান্ডে ১৮ বছরোর্ধ্ব ধূমপায়ীর সংখ্যা ছিল ৭৭ লাখ, যা ২০১৯ সালে ৫৭ লাখে কমে এসেছে। দেশটির জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ধূমপায়ীর সংখ্যা হ্রাসে অন্যতম ভূমিকা ভেপিংয়ের।
২০১৫ সালে পাবলিক হেলথ অব ইংল্যান্ড তাদের সবচেয়ে সাড়া জাগানো গবেষণায় দেখেছে, সাধারণ সিগারেটের তুলনায় ভেপিং ৯৫ শতাংশ কম ক্ষতিকর। এই পরিপ্রেক্ষিতে দেশটির ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিস ধূমপান ছাড়ার জন্য ভেপিং ব্যবহারের পরামর্শ দিচ্ছে। এর অংশ হিসেবে যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন হাসপাতালের দোকানগুলোতেও ভেপিং বিক্রি হচ্ছে।
এর আগে ২০২০ সালে গবেষণায় দেখা যায়, নিকোটিন নির্ভর ই-সিগারেটকে ধূমপান ছাড়ার সবচেয়ে কার্যকরী উপায় হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। গেল বছর ইংল্যান্ডে ধূমপান ছেড়েছেন এমন ব্যক্তিদের সর্বোচ্চ ২৭ দশমিক দুই শতাংশ ভেপিংয়ের সহায়তা নিয়েছেন। আর সাড়ে ১৫ শতাংশ ধূমপায়ী নিকোটিনযুক্ত প্যাচ বা চুইংগামের সাহায্য নিয়েছেন।
এছাড়া যুক্তরাজ্যের ককরেন টোবাকো অ্যাডিকশন গ্রুপ বিভিন্ন দেশের ৫০টি গবেষণা পর্যালোচনা করে গবেষকরা বলছেন, ধূমপান ছাড়তে নিকোটিনযুক্ত প্যাচ বা চুইংগামের তুলনায় ভেপিং বেশি কার্যকর। শঙ্কা প্রকাশ করা হয়, ভেপিং হয়তো অধূমপায়ী তরুণ এবং কিশোর ধূপমানে আগ্রহী করে তুলতে পারে। কিন্তু গবেষণায় দেখা গেছে, কখনো ধূমপান করেনি এমন কিশোরদের এক শতাংশের কম ভেপিংয়ে আগ্রহী হয়েছে।
মালয়েশিয়ায় অনুরূপ এক গবেষণায় দেখা গেছে, ৮৮ শতাংশ ভেপিং ব্যবহারকারীরা আগে ধূমপানে আসক্ত ছিলেন। তবে ভেপিংয়ের সহায়তায় তারা আসক্তি কাটিয়ে উঠেছেন।
মালয়েশিয়ান ভেপ ইন্ডাস্ট্রি অ্যাডভোকেসির এই গবেষণায় আরও দেখা গেছে, প্রচলিত সিগারেট পুরোপুরি ছাড়তে পারেননি এমন ৭৯ শতাংশ ভেপার জানিয়েছেন, তারা ভেপিং শুরু করার পর থেকে আগের তুলনায় ধূমপান উল্লেখযোগ্য মাত্রায় কমাতে পেরেছেন।