সিগারেট ছাড়তে যারা বেগ পাচ্ছেন তাদের জন্য ভ্যাপিংয়ে বিকল্প সমাধান দেখছে ইউরোপের দেশগুলো। সাম্প্রতিক সময়ে দেশেও ধূমপান ছাড়ার উপায় হিসেবে ভ্যাপিংয়ের দিকে ঝুঁকছেন অনেকে। বিশেষ করে শহুরে মানুষের কাছে ভ্যাপিং জনপ্রিয় হচ্ছে। ভ্যাপিং বা ইলেট্রনিক সিগারেটের জনপ্রিয়তার পেছনে বড় কারণ কি হতে পারে? তা নিয়ে বিস্তর গবেষণা দেশের বাইরে হলেও দেশে এখনও এ ধরনের কোন গবেষণা হয়নি। এর উপকার বা ক্ষতিকর দিক নিয়েও তাই এখানে পরিষ্কার কোন ধারণা নেই। সূত্র জানিয়েছে, গত বছরের আগস্টে ব্রিটেনের এমপিদের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক কমিটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘ভ্যাপিং সিগারেটের চেয়ে কম ক্ষতিকর। ভ্যাপিং সহজলভ্য হলে সিগারেট ব্যবহার বা ধূমপান ছাড়তে এটি মানুষকে সাহায্য করবে। ইংল্যান্ডের পাবলিক হেলথ বিভাগ বলছে, সিগারেটের চেয়ে ভ্যাপিং শতকরা ৯৫ ভাগ নিরাপদ। যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল হেলথকেয়ার সার্ভিস (এনএইচএস) দাবি করছে, ২০১৫ সাল পর্যন্ত এনএইচএসের স্টপ স্মোকিং সার্ভিসের আওতায় ইলেট্রনিক সিগারেটের সাহায্য নিয়ে প্রতি ৩ জনে ২ জন ধূমপায়ী ধূমপান ছাড়তে সক্ষম হয়েছে। ইলেকট্রনিক সিগারেট মূলত ডিভাইস হিসেবে বহুল পরিচিত। এই ডিভাইস থেকে বাষ্প বা হালকা ধোঁয়ার মতো নিকোটিন নিঃসৃত হয়। এটি ব্যবহারকারী গ্রহণ করে যা তাকে সাধারণ সিগারেটের ধোঁয়া নেয়ার মতো অনুভূতি দেয়। ইলেট্রনিক সিগারেট হলো ধোঁয়াবিহীন সিগারেট, যা সিগারেটের মতো দেখতে হলেও জ্বালানোর প্রয়োজন পড়ে না। এটা ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থ বাদ দিয়ে শুধু নিকোটিন গ্রহণ করার একটি প্রক্রিয়া। আন্তর্জাতিক পরিসরে দ্রুত জনপ্রিয় হয়ে ওঠা ভ্যাপিং বাংলাদেশেও সাড়া ফেলেছে। জানতে চাইলে হলি ফ্যামিলি হাসপাতালের চিকিৎসক সাজ্জাদ খান বলেন, ‘সিগারেট ছাড়ার পরিকল্পনা করছিলাম। কিছুতেই হয়ে উঠছিল না। শেষ পর্যন্ত ভ্যাপিং-এ সমাধান পেয়েছি। ভ্যাপিং কতটুকু নিরাপদ? সে বিষয়ে তিনি বলেন, ‘সিগারেটের তুলনায় ভ্যাপিং ৯৫ শতাংশ কম ক্ষতিকর বলে বেশ কিছু আন্তর্জাতিক গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে। দেশে এ নিয়ে তেমন গবেষণা এখনও হয়নি। তবে আমাদের পর্যবেক্ষণ ও অভিজ্ঞতায়- একধাপে সিগারেট ছেড়ে দেয়ার উদাহরণ নেই বললেই চলে। ভ্যাপিং এ ক্ষেত্রে একটি ভাল সমাধানও বটে। এতে নিকোটিনের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণেরও সুযোগ রয়েছে। ২০৪০ সালের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তামাকমুক্ত দেশ গড়ার যে পরিকল্পনার কথা ঘোষণা করেছেন তা বাস্তবায়নে ধূমপান থেকে সরে আসতে ভ্যাপিং বড় ধরনের ভূমিকা রাখতে পারে বলেও মনে করেন ডা. সাজ্জাদ খান।