ধূমপান ছাড়তে ভেপিংয়ের পরামর্শ দিতে পারবেন যুক্তরাজ্যের চিকিৎসকেরা

যুক্তরাজ্যে ধূমপানে হ্রাসের জন্যে প্রেসক্রিপশন হিসেবে ভেপিং ব্যবহারে পরামর্শ দেয়ার চিন্তাভাবনা চলছে। এমনটা হলে যুক্তরাজ্যই হবে প্রথম দেশ যেখানে ভেপিংকে ধূমপান হ্রাসে এক ধরনের ওষুধ হিসেবে বিবেচনা করা হবে। ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিসের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রী সাজিদ জাভিদ। যুক্তরাজ্যের ওষুধ ও স্বাস্থ্যসেবা সামগ্রী নিয়ন্ত্রক সংস্থা হালনাগাদ নীতিমালা প্রকাশের প্রস্তুতি চূড়ান্ত করেছে; যেখানে চিকিৎসা সেবায় প্রক্রিয়ায় অনুমোদিত হতে যাচ্ছে ভেপিং। এর ফলে ধূমপান ছাড়তে আগ্রহী এমন ব্যক্তিদের ভেপ ব্যবহারের পরামর্শ বা প্রেসক্রিপশন দিতে পারবেন চিকিৎসকেরা। উৎপাদিত ওষুধ যে প্রক্রিয়ায়, ওষুধ ও স্বাস্থ্যসেবা সামগ্রী নিয়ন্ত্রক সংস্থার অনুমোদন পায়, ভেপও একই প্রক্রিয়া অনুসরণ করে অনুমোদন পাবে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। হালনাগাদ নীতিমালার আওতায় ভেপ উৎপাদকেরা তাদের পণ্য নিয়ন্ত্রক সংস্থার কাছে জমা দেবেন। নির্ধারিত প্রক্রিয়া এবং গুণগত মান যাচাইয়ের পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে তা অনুমোদন পাবে বলে জানিয়েছে দেশটির সরকারি ওয়েব সাইট।

অনুমোদন পাওয়ার পর চিকিৎসকেরা ব্যক্তি ভেদে ধূমপান ছাড়ার জন্য প্রয়োজন অনুযায়ী ভেপ প্রেসক্রিপশন হিসেবে দিতে পারবেন। তবে শিশু এবং অধূমপায়ীদের বেলায় ভেপ ব্যবহার না করার নিষেধাজ্ঞা আছে।ভেপিংয়ে প্রচলিত সিগারেটের মতো ক্যানসারে অন্যতম অনুঘটক কার্সিনোজেন নেই। তাই এটাকে অনেক নিরাপদ বিবেচনা করা হয়। যুক্তরাজ্য এবং যুক্তরাষ্ট্রের গবেষকেরা দেখেছেন, নীতিমালা করে বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখা গেলে ভেপ প্রচলিত সিগারেটের তুলনায় অনেকাংশে কম ঝুঁকিপূর্ণ হয়। আর তা যখন চিকিৎসকদের প্রেসক্রিপশনে আসবে তখন তা আরও কঠোর পরীক্ষা, মাননিয়ন্ত্রণ এবং নিরাপত্তা পর্যবেক্ষণ উতরে আসবে। যুক্তরাজ্যে সরকার ভেপিংকে উৎসাহিত করছে, তাই সেখানে ধূমপান ২৫ শতাংশ কমে গেছে। দেশটিতে ধূমপান হ্রাসের জন্য নানান উপায় বিবেচনা করা হচ্ছে। এর মধ্যে সবচেয়ে কার্যকর হিসেবে প্রতীয়মান হচ্ছে ভেপিং। ২০২০ সালে সর্বোচ্চ ২৭ শতাংশ ধূমপায়ী প্রচলিত সিগারেট ছেড়েছেন ভেপিংয়ের সাহায্য নিয়ে। আর নিকোটিন রিপ্লেসমেন্ট পদ্ধতি প্যাচ বা চুইং গামের সাহায্যে ছেড়েছেন ১৮ শতাংশ। সম্প্রতি এক ওয়েবিনারে ভেপার অ্যালায়েন্সের পরিচালক মাইকেল ল্যান্ডল বলেন, ধূমপান ছাড়তে ভেপিং এর সাফল্য অবাক করার মতো। তাদের সংগঠনের পর্যবেক্ষণে হলো, ভেপিংয়ের সহায়তা নিয়ে বিশ্বের ২০ কোটি ধূমপায়ী ধূমপান ছাড়তে পারবেন। ল্যান্ডল বলেন, “বাংলাদেশের বিষয়েও আমরা পর্যালোচনা করেছি। বর্তমানে যুক্তরাজ্যে ভেপিং নিয়ে যেসব নীতিমালা রয়েছে তা যদি বাস্তবায়ন করা হয় তাহলে বাংলাদেশে ৬০ লাখ ধূমপায়ী প্রচলিত সিগারেট ছাড়তে সফল হবেন।”