ধূমপানের চেয়ে কম ঝুঁকিপূর্ণ ভেপিং

ভেপিং বা ই-সিগারেট অধূমপায়ীদের নিকোটিনে আসক্ত করতে পারে বলে আশঙ্কা করেন অনেকে। এ কারণে এর বিরোধিতা করা হয়। তবে এমন শঙ্কার তেমন ভিত্তি নেই বলে উঠে এসেছে যুক্তরাষ্ট্রের এক গবেষণায়। বরং ভেপিং নিয়ে অমূলক শঙ্কা, বিভ্রান্তিকর তথ্য ও নেতিবাচক প্রচারণার কারণে ধূমপান হ্রাসের উদ্যোগ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে বলে অনেকে মনে করেন।

ভেপিংয়ের ঝুঁকি ও উপকার নিয়ে গবেষণা করেছেন ১৫ জন গবেষক। ‘ব্যালান্সিং কনসিডারেশন অব দ্য রিস্কস অ্যান্ড বেনিফিটস অব ই-সিগারেট’ শীর্ষক গবেষণা প্রবন্ধটি সম্প্রতি আমেরিকান জার্নাল অব পাবলিক হেলথে প্রকাশিত হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের অধিকাংশ সংস্থা, গণমাধ্যম এবং নীতিনির্ধারকরা ভেপিংয়ের বিরোধিতা করেন। তাদের শঙ্কা, ভেপিংয়ের কারণে অনেক অধূমপায়ী ধীরে ধীরে ধূমপানে আসক্ত হয়ে যেতে পারে। কেউ কেউ ভেপিংকে ধূমপানের চেয়েও বেশি ক্ষতিকর মনে করেন।

তবে ন্যাশনাল একাডেমি অব সায়েন্স, ইঞ্জিয়ারিং অ্যান্ড মেডিসিনের বরাতে এই গবেষণায় বলা হয়েছে, ভেপিং প্রচলিত ধূমপানের চেয়ে বহুলাংশে কম ঝুঁকিপূর্ণ। গবেষকরা বলছেন, তরুণদের ভেপিং থেকে দূরে রাখার জন্য প্রয়োজন বাজার তদারকি আর নীতিমালা।

ভেপিংয়ের মাধ্যমে প্রাপ্তবয়স্কদের ধূমপানের হারও কমে আসবে।

গবেষকেরা দেখেছেন, আগে থেকেই ধূমপানে অভ্যস্তদের মধ্যেই ভেপিং ব্যবহারের হার বেশি। অধূমপায়ীদের ভেপিং ব্যবহার সামান্য। তারা বলছেন, বাজারে বিভিন্ন ফ্লেভারের ভেপিং জুস পাওয়া যায়। এসব জুসের মান নিয়ন্ত্রণে কোনো তদারকি থাকে না। আর নানা স্বাদের এসব জুসের কারণে কেউ কেউ ভেপিংয়ে ঝুঁকছে। তবে মানহীন জুস বন্ধ এবং বাজার তদারক করা গেলে অধূমপায়ীদের ভেপিংয়ে আগ্রহ কমানো যাবে।

যুক্তরাজ্যের জনস্বার্থ অধিদপ্তরের (পিএইচই) গবেষণায় দেখা গেছে যে কখনও ধূমপান করেনি এমন কিশোরদের এক শতাংশের কম ভেপিংয়ে আগ্রহী হয়েছে। ১১ থেকে ১৮ বছর বয়সী শূন্য দশমিক ৮ শতাংশ কিশোর গত বছরে প্রতি মাসে অন্তত একবার ভেপিং করেছে। এই কিশোরদের অধিকাংশই ধূমপায়ী বা আগে ধূমপান করছে। কখনও ধূমপান করেনি এমন কিশোরদের মধ্যে ভেপিং গ্রহণের হার সামান্য।

গবেষকরা বলছেন, ধূমপান বছরে লাখ লাখ লোকের মৃত্যুর কারণ হয়। তবে ভেপিংয়ের মাধ্যমে এই ঝুঁকি উল্লেখযোগ্য হারে হ্রাস করা সম্ভব। গবেষকদের পরামর্শ, জনস্বাস্থ্যের কথা বিবেচনায় নিয়ে এবং ভেপিংয়ের ইতিবাচক ভূমিকা আমলে রেখে নীতিমালা প্রণয়ন করা প্রয়োজন যাতে প্রচলিত ধূমপায়ীর সংখ্যা কমানো যায়। এতে ধূমপানমুক্ত দেশ গড়ার লক্ষ্য পূরণ হতে পারে।